
হুমকির মুখে রূপসার শ্রীরামপুর বিলের এক কিলোমিটার ভেড়ীবাঁধ
- প্রকাশ : মার্চ ৩, ২০২১, ১১:৩৫অপরাহ্ণ
হুমকির মুখে খুলনার রূপসা উপজেলার আঠারোবেঁকী নদীর কোল ঘেঁষে নৈহাটী বিল শ্রীরামপুরের ওয়াপদা ভেড়ীবাঁধ (পোল্ডার-৩৬/১)।
ইতোমধ্যে বাঁধের অন্তত এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার অন্তত দশ গ্রামের মানুষ বিল শ্রীরামপুরের প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমিতে ধান ও বিভিন্ন মৌসুমী ফসল চাষাবাদ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
এমতাবস্থায় ভেড়ীবাঁধটি যদি মেরামত করা না হয় তাহলে বিল পাড়ের চারটি গ্রাম বর্ষা মৌসুমের আগে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নের বিল শ্রীরামপুরে চার গ্রামের কৃষক-কৃষাণীরা চাষাবাদ করে বছরের পর বছর জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
বিলের পশ্চিম প্রান্তে প্রায় ১ কিলোমিটার ভেড়ীবাঁধ প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে পড়ে। আর প্রতিবছর ছোটখাটো মেরামত করে কোনরকম ধামাচাপা দেয়া হয়। এ বছরও অন্তত ৮০০ মিটার ভেড়ীবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে।
চর শ্রীরামপুর পূর্বপাড়ের অন্তত দশ গ্রামবাসীর সমন্বয়ে ৫১০ হেক্টর জমি নিয়ে গঠিত শ্রীরামপুর বিল পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি। গ্রামবাসীর অভিযোগ, ওয়াপদা ভেড়ীবাঁধ মেরামোতের জন্য উর্ধ্বতন মহল থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।
এমতাবস্থায়, বাঁধটি মেরামত করা না হলে বিল পাড়ের চারটি গ্রাম বর্ষা মৌসুমের আগে যেকোনো সময় প্লাবিত হতে পারে। ইতোমধ্যে কিছুকিছু জায়গায় মূল ভেড়ীবাঁধ নদীগর্ভে বিলীনও হয়ে গেছে। কয়েকমাস আগে বাঁধের যেস্থানগুলো মেরামত করা হয়েছিল সে স্থানগুলো আবারও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
কিছুদিন আগে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে নদী পাড়ের একটি বসতঘরও। শ্রীরামপুর বিল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুর রউফ কোরেশী জানান, ‘আঠারোবেঁকী নদীর ওপারের দখলকারদের কারণে মূলতঃ বিলের এ বাধটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভাটা মালিকরা পলি জমানোর উদ্দেশ্যে নদীর ওপাড়ে ইট ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অন্য পারে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। দখলদারদের কবল থেকে নদী উদ্ধার করে নদীর গতিপথ ঠিক রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে এনে ভেড়ীবাঁধ রক্ষার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
এদিকে ভাঙন কবলিত ভেড়ীবাঁধ মেরামতের লক্ষে শ্রীরামপুর বিল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ কোরেশী, সাধারণ সম্পাদক মোমরেজ আলীসহ সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও গণমাধ্যম কর্মী, এলজিইডি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভাঙন কবলিত ভেড়ীবাঁধ পরিদর্শন করেছেন।
গেল বছর শ্রীরামপুর বিলের খাল খনন ও ভেড়ীবাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র ঢাকার একটি প্রতিনিধি দল ভেড়ীবাঁধটি পরিদর্শন করেন। রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাসরিন আক্তার জানান, ‘ভেড়ীবাঁধ রোধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সহযোগিতা করতে হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে শিগগিরই কথা বলবেন বলে জানান তিনি।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, ‘সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’